কিউই ফল থেকে হৃদরোগ প্রতিরোধকারী পুষ্টি পরিপূরক আবিষ্কার বাঙালি বিজ্ঞানীর

চিকিৎসা বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে যুগান্তকারী আবিষ্কারের জন্য কারা নোবেল পুরস্কার পাবেন গত কয়েক বছর ধরে সে ব্যাপারে নোবেল কমিটিকে বছরের সেরা আবিষ্কারগুলির সন্ধান দিয়ে আসছেন নদীয়ার গাংনাপুরের বাসিন্দা ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিকিৎসাবিজ্ঞানী অসীম দত্ত রায়। বর্তমানে তিনি নরওয়ের অসলো বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধ বিভাগের শিক্ষক। যার তিনশটির বেশি গবেষণাপত্র এবং একাধিক আন্তর্জাতিক পেটেন্ট রয়েছে। টমেটো ও কিউই ফলের মধ্যে থাকা বিশেষ উপাদান ব্যবহার করে কিভাবে হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা কমানো যায় তা উদঘাটন করে কয়েক বছর আগে চিকিৎসা বিজ্ঞানে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন তিনি। এবার সেই কিউই ফলের নির্যাস থেকেই হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধকারী একটি জীবনদায়ী পুষ্টি পরিপূরক উপহার দিলেন তিনি। রবিবার থেকেই বিশ্বের বাজারে চলে এল ‘হার্টি ফাইন’ নামে এই পুষ্টি পরিপূরক। আন্তর্জাতিক বাজারে এর যাত্রা শুরু হল কলকাতা শহর থেকেই।

অধ্যাপক অসীমকান্তি দত্তরায়ের গবেষণার ওপর ভিত্তি করে উৎপাদিত হয়েছে ‘হার্টি ফাইন’

কলকাতায় এক অনুষ্ঠানে এটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বিজ্ঞানী অসীম দত্তরায় নিজেই। তিনি বলেন,কিউই ফলের এই নির্যাস সংবহনশীল অনুচক্রিকার অতিসক্রিয়তা এক জায়গায় জড়ো হওয়া কমায়, উচ্চ রক্তচাপ কমায়, রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমায়।

তিনি জানান, হার্টি ফাইন’ তৈরি হয়েছে এল-আর্জিনাইন ও কিউই ফলের নির্যাস দিয়ে। এই গবেষণায় অধ্যাপক অসীমকান্তি দত্তরায়ের সঙ্গে রয়েছে জেনিযেন ফার্মাকন ও ইয়ার্ডল্যাবস প্রাইভেট লিমিটেড নামে দুই সংস্থা। তবে এটির ডিট্রিবিউশনের দায়িত্বে রয়েছেন ইয়ার্ডল্যাবস প্রাইভেট লিমিটেড। এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এই সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর সায়ন্তন রায়চৌধুরী এবং ডিরেক্টর ডক্টর সুবীর সরকার। তারা জানান, হৃদরোগ কমাতে বিশ্বের প্রতিটি মানুষের কাছে এটি পৌঁছে দেওয়াই তাদের মূল লক্ষ্য। এই প্রথম ভারতীয় বাজারে এল এই ধরনের পুষ্টি পরিপূরক। যেটি ইতিমধ্যেই আটটি দেশে হিউম্যান ট্রায়াল হয়েছে বলে দাবী বিজ্ঞানীর।

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা হু-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে প্রতিবছর ১৭.৭ মিলিয়ন বা ১ কোটি ৭৭ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয় শুধুমাত্র হৃদরোগের জন্য। এর মধ্যে কার্ডিও ভাস্কুলার সমস্যাও রয়েছে। বিশ্বে প্রতিবছর যত জনের মৃত্যু হয় তার ৩১% হয় হৃদরোগের সমস্যার জন্য। হৃদরোগের আশঙ্কা কমাতেই এই আবিষ্কার বলে দাবী এই বাঙালী বিজ্ঞানীর।