২৫ ফেব্রুয়ারি বিকেল থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি বিকেল পর্যন্ত কলকাতার তপন থিয়েটারের রঙ্গমঞ্চে থিয়েটার জেগে থাকল টানা ২৪ ঘণ্টা। বছরে একদিন থিয়েটারকে ঘুমোতে দেবো না- এমন ভাবনা মাথায় নিয়ে মিউনাস নাট্যদলের কর্ণধার উৎসব দাসের মস্তিষ্কপ্রসূত টানা ২৪ ঘণ্টা নাট্যোৎসব শুরু হয় ২০০৭ সালে। মাঝে কয়েক বছরের বিরতির পর আবার এইবছর ফিরে এলো নাটককে ভালোবাসে নাটকের সাথে দিনরাত জেগে থাকার এই উৎসব।
২৫ ফেব্রুয়ারি বিকালে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব অরূপ রায়, পূর্বাচল দাশগুপ্ত, নাট্য গবেষক ড. শুভ জোয়ারদার, বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী হিরণ মিত্র, থিয়েটার ফটোগ্রাফার কোয়েলা এবং নৃত্যশিল্পী চন্দ্রা কোলে বিশ্বাস।
এবারের উৎসবে বিভিন্ন জেলা ও কলকাতা থেকে মোট ২৫ টি নাট্যদল অংশগ্রহণ করেছিল। অংশগ্রহণকারী দলগুলি হল বঙ্গ পুতুল, অনীক, কোচবিহার থিয়েটার গ্রুপ, শব্দ নাট্যচর্চা কেন্দ্ৰ, মহেশতলা রূপকথা, আত্মজ (সিউড়ী), ইছাপুর সন্ধিক্ষণ, এষণা (জয়নগর), শ্যামবাজার নাট্যচর্চা কেন্দ্র, সংস্থিতি (চন্দননগর), মুক্তমনন স্পীড, সন্দৰ্ভ, বিসর্গ, থিয়েটার টেন্ট, কাল প্রতিমা, হালিশহর অ আ ক খ, চ্যাটার্জিহাট অনুকৃতি, যাদবপুর ব্যতিক্রম, চণ্ডীতলা প্রম্পটার, অঙ্কুর কলাকৃষ্টি (কোলাঘাট), যাদবপুর মন্থন, মিউনাস, ইউনিটি মালঞ্চ, রাজডাঙা দ্যোতক, গড়জয়পুর সপ্তর্ষি।
বিশিষ্ট নাট্যকার ও ‘অনীক’ নাট্যদলের কর্ণধার শ্রী অরূপ রায় বলেন,”মিউনাস নাটককে ভালোবেসে একটি অভিনব আয়োজন করেছে। তাই এই আয়োজনকে সফল করার দায়িত্ব সকলের। বিশেষত দর্শকদের, যাদের সামনে না পেলে নাটক শুরু হয় না। তাই নাটককে ভালোবাসতে হলে নাটককে বাঁচিয়ে রাখতে গেলে দর্শকদেরও দায়িত্বশীল হতে হবে। তাঁরা নাটক দেখতে আসুন, গঠনমূলক সমালোচনা করুন তবেই নাটক আরও এগিয়ে যাবে”।
বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী হিরণ মিত্র জানান, “টানা ২৪ ঘন্টার নাটকের আয়োজন করতে সাহস লাগে, আবেগ লাগে। নাটক নিয়ে মিউনাস এবং উৎসবের সেই সাহস ও আবেগ আছে। তাদের এই সাহসকে আমি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই”।
মিউনাসের কর্ণধার উৎসব দাস বলেন, ” টানা ২৪ ঘন্টার নাট্যোৎসব শুধু গিমিক বা প্রচারের জন্য নয়। নাটককে ভালোবেসে ২৪ ঘন্টা জেগে থাকা ও নাটককেও জাগিয়ে রাখাই হল এই নাট্যোৎসবের মূল ভাবনা। এই উৎসব আয়োজনের মাধ্যমে আমরা পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন নাট্যদলের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে তুলতে চেয়েছি। জেলার অনেক দল ভালো ভালো নাটক করেন। তাদেরকে কলকাতায় নাটক পরিবেশন করার সুযোগ করে দেওয়া এবং কলকাতার দর্শকদের সামনে জেলার নাটকগুলো তুলে ধরা। এই মেলবন্ধন করাটাই এই আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য”।